বাক্‌ ১৪৯ ।। নকিব মুকশি


 

মানতা দেবী

 

মানতা দেবী—

বৃক্ষের ফল—

নদীর জল—

বায়ুকিরণ—

মানতা দেবী—

সেলাই করে যায় পণ্যের সংসার—ঝরনার নিচে বয়ে যাওয়া টমেটোক্ষরণের ইতিহাস...

 

হলুদ বিদ্যালয়—

কলের জোয়ার—

রাজার আজান—

কেমিক্যাল ফল—

হলুদ বিদ্যালয়—

হৃদয়ের পাতায় পাতায় জন্ডিসের অক্ষরে লিখে যায় ‘এসো বুকে বুক মিলাই, কল্যাণ পাই’!

 

দোয়াতদানি—

বইয়ের মলাট—

হৃদয়-গরাদ—

দোয়াতদানি—

জড়ো করে খুচরো খুচরো অনন্ত আকাশ গেঁথে দেয় প্রবহমান মাকড়সার স্রোতের রথে...

 

গোলাপজাম—

শিশুসন্তান—

মায়ের বুক—

গোলাপজাম—

বিনীত করে সেজদার নমুনায় এমনকি সন্ন্যাসী পুরুষের পাতা ও উগ্র তার শিরস্ত্রাণ...

 

বিমাতার বুক—

স্বৈরশাসক—

একতীরভাঙা নদী—

বিমাতার বুক—

কলমকৃত ডালের দিকে কুঁচকানো চোখে তাকিয়ে থাকা গাছ—কট্টর স্বদেশপ্রেমী...

 

আবহমান—

ভালোবাসা—

প্রেম-প্রণয়—

ছুরি-রান্না—

আবহমান—

রোজনামচার কয়েদি যেখানে ব্যান্ডেজ হয়ে নামে সাগর, সংগীত ও বাগানের ব্যাপন...

 

হলুদের আস্তানা—

দিলদরিয়া ঝিল—

আবছা বাসর—

হলুদের আস্তানা—

কোঁড়লের ওপর সবুজ ঠোঁটের আলুথালু নকশা ফুটিয়ে ভেতরে ছড়ায় বিবাহ-বন্ধন...

 

পালকি—

জরায়ু—

সাগর—

মৃত্তিকা—

পালকি—

অর্ধকুসুমের দিন-রাত বয়ে বয়ে ক্লান্তিতে আশ্রিত গাছের নিকট তখন নির্জন ছায়া...

 

ঝুমঝুম লটকন—

আকাশের মঞ্চ—

গমগম পাহাড়—

ঝুমঝুম লটকন—

বৃষ্টি ছেড়ে যেন কেঁদে মরে শিশুদের অভিধান, ভূত্বকে খুলে আছে দুধের হ্রদ...

 

টলানো মাচা—

ভাঙা আকাশ—

টলমলে মাস্তল—

টলানো মাচা—

দূর সূর্যদের দিকে ছিঁড়ে যাওয়া বায়ুমণ্ডল—শিকড়ের উধাও যত ছাতা ও ছাদ...

 

ঝিনুকের হ্রদ—

কলমের পুঁজ—

হলুদ প্রদীপ—

ঝিনুকের হ্রদ—

ছেয়ে আছে অক্ষরের বারান্দাজুড়ে সমস্ত জিব নিয়ে যেন বেশরম ডিগ্রিভরা শির...

 

 

 

 

 

শিশুভরা পাতা

 

সম্পর্কে ‘আবেগঋদ্ধসেতু’ আরবি ঘোড়া—শিশুভরা হৃদয়...

—এখানে প্রেম মজবুত, ফোটে নকশি—রস-লতাপাতা...

 

বায়ুতারিত পালতোলা নাও—বাগানের ওড়না—সুরভি...

—এখানে প্রেম মজবুত, গানে ফেটে পড়ে হরিণী—বৃষ্টি...

 

কবির বিষুবে নেমে আসে বনের বেয়াড়া পাখি—হাওয়া...

—এখানে নেই পাণিনি, শাসন, গরাদছায়া—মাছের ঝিল...

 

নিবু নিবু চোখের আজানে ভাসমান সমস্ত দিনের ছায়াফ্রেম...

—এখানে আকাশ হয়ে যায় হাইজ্যাক সমস্ত অপারগতায়...

 

পাতারা হলুদ হওয়ার আগেই চুইয়ে পড়ে কারো খেতাব...

—এখানে ঢেউয়ের গন্তব্য কুয়োর তীর, আঙিনা ও মহল্লা...

 

তেজপাতার রঙ ফোটার দিনে জোড়া পাখি বাজায় ঘণ্টা...

—এখানে অভিশপ্ত গোলাকার আয়ু ছড়ানোর আয়োজন...

 

শিশুভরা আকাশগুলো ধীরে ধীরে হলুদের সাথি হয়ে ঘুমায়...

—এখানে সূর্যাস্তের তাগা ছিঁড়তে চেয়েও জড়ায় হায়াত... 

 

No comments:

Post a Comment