বাক্‌ ১৪৯ ।। মায়িশা তাসনিম ইসলাম


 

প্রত্যাখ্যানগুলোর সাথে আলাপ করতে করতে নিজেকে প্রথম সন্তানের মতো স্বাগত জানাই। প্রসব বিশেষজ্ঞ কিছু রাতের তত্ত্বাবধানে এসব আলাপ হয়। রোমান্টিসিজমের পেটে সিজার করার বিপক্ষে অনেক তর্ক বিতর্কের ঝামেলা। শেষে বুক ও জরায়ু মাঝে যে যোগচিহ্ন, তাতে টান পড়া লেবার পেইন। ফজরের পর দেখা যায় মোনাজাতরত প্রেমিকা হৃদয়ের মা হয়ে বসে আছি!

 

ফজরের পর পাখিদের নতুন আযান শুরু হয়। তারা মূলত হৃদয়ের ওয়াক্তেই সমস্ত পৃথিবীর মুয়াজ্জিন। সেহেরির পর রাত শুকোনোর অপেক্ষা, মুমিনের নেকির খাতার চেয়ে বেশি জবজবে রয় এসব বৃশ্চিক রাত! রাতকে আচ্ছামত ধোয়ার পর ধোপা চাঁদ, বাহাত্তর কুমারীর নির্লিপ্তি নিয়ে আলকাতরা মাখে গায়ে

 

আজ চাঁদটা কোথায় আছে কে জানে! রাশিশাস্ত্রে বলা হয় যে চাঁদের বাটখারায় মনের ভার উত্তোলন দেখা গেলে নাজেহাল হয়ে যেতো চোখের পরমায়ু! আমার চাঁদ-- কবে যে জন্মকুণ্ডলীর একের পর এক বারোটা ঘর ফুঁড়ে ফুঁড়ে পালিয়ে গেলো, কাজলচোখেও মালুম পড়েনি...

 

 

বৃশ্চিক পূর্ণিমার রাতে

 

ফিরে গেছি আবারো স্ব(গ্রাহ্য) পথেই

ভিনদেশী নিঃসঙ্গ নাগরিকতার যে পথ

তারারা নেমে আসে বিধবা সংকোচে

বৃহস্পতিবার রাতের অযাচিত বিনয়

 

এ তারারা ফুটে আছে দেশভাগহীন

রুহ ভরা চোখের মতো অনাগরিক আলো

আর আকাশ? তাদের কতোটুকুই বা দেখাতে পারলো?

কতোটুকু দিলো তাদের বেনামী জ্যোতির পরিচয়?

যেনো প্রথাগত নীরদে ব্যর্থ অভিভাবক।

 

'আলো গোত্রের সম্মানিত সিপাহীরা

ভারী অন্যায় হলো, হয়েছে আমার সাথেও যেমন

তোমরা আমার রক্তের সম্পর্কহীন ভাইবোন'

 

'তুলনায় যেয়ো না মানবী প্রিয়

শুধুমাত্র জমিনেরে কাটা কাঁটাতার হিসাবে।

কতোটুকুই বা সাদা আয়ুর রঙে চুল পাকলো?

সহস্র বছর এ তারাজন্মে দিগদিশার নকশা এঁকে জেনেছি

যে দিব্য দেখাতে জানে তার নিজের চশমা হারায়ে যায়'

 

পথ দেখাতে দেখাতে তারারাও টের পায়

অনন্ত বিরাজতা এই 'নো ম্যান'স ল্যান্ডে'ই

যেখানে কেউ ঘর বাধেনি সেখানেই ঘর

যারা মূলত আশ্রয় দেয় সেখানে ঘর উঠে না

 

তারাগুলো তাদের গুরু যে সূফী চাঁদ

তার কাছে জানালো খুলে আম ফরিয়াদ

'আজ প্রচণ্ড নীল হয়ে যান মহাশয়

লেদার ব্ল্যাক অনুভবগুলো চকমক করুক স্যাফায়ার জোছনায়'

 

 

 

যে ঘরের ঘর নেই ১১-- দ্যা হারমিট

 

 

অনেকগুলো শনিবার চলে গেলো। শনিবারগুলোতে দেখা হওয়ার কথা থাকে। আর শনিবারগুলো খুব বৃহস্পতির মতো আচরণ করতো। ফুল এবং পরাগায়নের উর্ধ্বে চলে যাওয়া পতঙ্গ ক্ষমতায়

 

বৃত্তে ঘোরে বৃত্ত

বৃত্তে ভাঙে বৃত্ত

ট্যাবুর কম্পাস ক্ষয়ে ব্যাসার্ধ উড়াল!

 

সরলরেখার পরাজয়ে সেই বিকেলগুলোর বাতাস অনেক দৃশ্যমান। চতুর্থ মাত্রায় ডুবে যেনো পৃথিবীর শনিবার!

 

ঘুরতে ঘুরতে ভাঙে সময়

ভাঙতে ভাঙতে ঘুরি অতিক্রম

কেমন সিনক্রোনাস মায়াবী ভাঙচুর!

 

কত শনিবার চলে যাচ্ছে সেইসব শনিবার আবারো জব্দ করার লিপ্সায়। এসব দুর্বাসনায় আমার বৃহস্পতি সব ফুরোতে থাকে...

1 comment:

  1. অসাধারণ উপলব্ধি। খুব ভালো লাগলো। অনেক অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি

    ReplyDelete