বাক্‌ ১৪৯ ।। অনিকেশ দাশগুপ্ত

 

প্রয়াস

 

আধো-আলো সরণি ধ’রে এসেছি 

আমরা,স্বচ্ছ টিনের ছায়ায় বিছানো গত বৎসরের পঞ্জিকা

দুধসাদা সত্যটির মতো হতবাক চোখে 

আমাদের ভাগচাষ 

বিস্তৃত ক্ষেতের দিকে চলে গেছে

 

ফেনার চমকে

অস্পষ্ট আর্টের অবয়ব চতুর্দিকে তাক করে ঐ অগাধ

পীত লন্ঠন , স্বগতোক্তির ধুলোরাশি,

আর মধ্যদিনের নানান অগোছালো সুর

নর্দমার মুখে ফুটিয়ে তোলে নিথর আলো

 

পা দাপানোর বাতাস ঘুরে-ফিরে আসে সুষমায়

কলতলার বাক-প্রয়াসী ইশারায়

স্নানের যতি ছিটকে পড়ে আছে চারধারে 

 

 

 

আত্মঘাত

 

বহু প্রাচীন সরণির আলো-আঁধার শেষবার 

অন্ধ করেছিল আমাদের

 

চারপাশে ধূসর আঙুলে সান্ধ্য-বালিকারা এই জাগতিক পীত

এবং প্রাপ্তমনস্কতা নিয়ে  

জেনেছিল চঞ্চল এবং অভিষিক্ত তাদের সন্ততির

দূর রাজ্যপাট 

 

চারকোণা ট্রে থেকে দারুণ অভিঘাতে অহর্নিশি সেই

কুমারীত্বের দিনে, অলঙ্কারে, ফিরে আসে উন্মনা 

 

বাতির নেপথ্যে ধীর অন্ধকারে চেয়ে-চেয়ে

আজ এই বয়সে কেমন সমান ও পরিপাটি দাহন

কী এক অকাল অবয়বে তার অজস্র সত্তার

শিশুটি নিস্তব্ধ ছায়ায় তাকিয়ে

 

 

 

 

তামা

 

বিবর্ণ পুঁটলির দিকে গভীর ধ্যানে চাই

ছেলেধরা রৌদ্র নিয়ে প্রথম সকালের গতানুগতিক হাঁক

এবং হর্ষে, রোম খাঁড়া হয়ে দীর্ঘ চঞ্চুর পারে পেতে বসি

বীক্ষণের এই একমাত্র স্তর 

 

বার্তা নিয়ে ফিরে এসেছে কুকুরের সাদা-কালো প্রচ্ছদ

দীঘির যৌবনোন্মুখ গায়ে –

সুস্পষ্ট থামে চিত্রার্পিত চেয়ে থেকে-থেকে সারাটাবেলা

আল্পনার মতন ঋদ্ধ ও মেটে এক জন্ম-উপলক্ষে

এসে দাঁড়ালাম 

 

পায়সের ঘন ঘূর্ণি ,তার উদ্দীপনে মেলানো নিটোল বারান্দা

ভেদ ক’রে বিদগ্ধ পাখিরা উড়ে যাবে ভাবি ;

আর ইটের নগরভাবনা , নির্মিত তাম্রপত্রে চূর্ণ অক্ষরের ইশারা –

এমন মনোমুগ্ধকর হ’তে -হ’তে ঝকঝকে থালায় ধ’রে ফেলে

একটুকরো স্বচ্ছ খুনের ছায়া 

  

 


3 comments: