মৃত্যু উপত্যকা ৩৭
চোখের
সরলকোণে কয়েকফোঁটা জল
এমনি এমনি
একটু ভালোভাবে তাকালেই দেখা যায়
সেই কয়েকফোঁটা জলে আরও কয়েকফোঁটা চোখ
চেনা কাদায় বখাটেপনা থাকে না--
সুখের ডগায় কত পুঁইফুল ফুটেছে এককালে
এখনও ফুটতে পারে যত্নের মধ্যে থাকা অভিমান
সরিয়ে নিলেই
আর কেউ না মানুক অন্তত চোখেরা মানতো
দমকল পৌঁছবার আগেই পরিস্কার ঝকঝকে নরম ছায়া,
সাপ্লাই দিতে পারতো পাড়াতুতো আয়নামহলে
যেখানে পায়ের মাটি শেষ
সেইসব প্রগলভ শুন্যতার কান-মাথা পেটে সেঁধিয়ে যেত
যখন চোখ নিজের যাবতীয় আসবাব ফেলতে ফেলতে
আরও উঁচু আরও নিচু পাহাড়ের গন্ধে গিয়ে বসে পড়তো
হাত-পা ছড়িয়ে
রেলিং এখনও যদি সাত পাঁচ ব্যাটারির মন নিয়ে খোঁজে,
হাতড়াতে থাকা অবয়ব বাড়তি পেয়েই যাবে
কিন্তু খাদের ধারে হাঁটু-ভাঁজ চৌপায়াগুলো,
কোমর ছাড়াতে উঠে গেছে কোনও তারিখের শেষ মজলিশে
আসলে আজকাল,
গা'য়ে পড়ে দেখতে চাওয়া দূরত্বের ভাগে বড় ল্যাজা আর
মুড়োগুলো প্রতিদিনই আহ্লাদে আট-দশখানা হয়ে পড়ে...
মৃত্যু উপত্যকা ৫১
একগুচ্ছ
ডাস্টবিন
সবাই অনশন এবং সমুদ্র
বহন করছে কানায় কানায়
অসুখের মধ্যে যে শীতকালীন
সফলতার ইনস্টলেশন
সেই বাতিঘরের ছুতোয়,
পোড় খাওয়া নাবিকেরও
মুখমাথা ধোওয়ার অনীহা--
পোষা আছে...
মৃত্যু উপত্যকা ৫৭
আপিসফেরত
আসতে আসতে
আপিসের দিকে যেতে যেতে
ঘাড়ের পেছনে সামনে যেসব রোম অকারণে
নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখে যায়
তাদের নিয়ে হাঁটতে বেরনো ইকনমিক নয়
সামনের চেয়ারে বসা অচেনার ব্যক্তিগত
পরিচর্যা শুনতে শুনতে এই আমি
চোখের দিকে তাক করে একগলা ধোঁয়া ছেড়ে দিই
ওটুকুই তো আমরা খানিক নিজের মতো ছড়াতে পারি
মুঠো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর
অনস্তিত্ব বগলদাবা ক'রে গলায় বাংলা ঢালি
আর ফ্রি-তে বিরিয়ানি খাই যত গুরুদেবের
আসন ফ্লেভারে মুড়ে নিয়ে
এসব লিখতে বসা মানুষের কাজ নয়,
যদি আমি একবারও অ্যাসিডিটির বাৎসল্য পরখ করে দেখি
কোনোদিন
মায়ের স্তনের থেকে কোনও বিশ্বাসে সরে গিয়ে
হই প্রেরণা পীড়িত
কি বলব তোমাদের
কি বলব না ভাবতেই চলভাষের পকেটে
সে-ই টেরোডাকটিলের সুরসপ্তকে বেজে উঠি
তোমরা এবং আমিও হেসে গড়াই নামধাতুর মতো--
যাক আবার প্রিয় বস্তু খাওয়ার বিষয়ে নেমেছে
জন্মাবধি পাওয়া ভাষায় 'কিচাইন' আয়ত্ত করি,
ভুলের শরীরে নিষ্পাপ না হতে পারলে সামাজিক
মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে কেউ মহাকবি হবেন কি ভাবে?
রূপকের সুগন্ধী বুকে টেনে নিয়েই হঠাৎ,
তোমাকে ছেঁচড়ে আনি উত্তুরে কম্বলের পশ্চিমী কেতার
উৎসারে
কেননা বেশিক্ষণ বর্ণনা ছেড়ে রাখলে চাঁদমাটি দিয়ে গড়া
চরিত্র দুরূহের নাভিশ্বাসে রাতুল হয়ে যায়
এরকম ফাজলামোও স্বত্ব বিকিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত
স্বাত্ত্বিক সাধনাটুকু পায়না আমিষে, ভাইরালে
কিচ্ছু না, তোকে তুমি বলতে চেয়ে
তোমাকে আপনি বলতে চেয়ে একটা মুখে
একটানা তিন সেকেন্ড কথাকলি চালাবো যে,
"কাছেই কুটির ফেঁদেছি,একদিন তাহলে একটু..."
রদ্দি মার্কা ওই অতটুকু বিশালের মাথার চুল
ভুরুর চুল চোখের চুল কানের চুল নাকের চুল
ঠোঁটের চুল কামানো মুখটায়
আবিষ্কার ক'রে ফেলা ভালোবাসার মতো প্রথমেই,
আগ্রহ শুকিয়ে মেলে দিই
নানারকম ভঙ্গিমায় ঝোলার চেষ্টা করি
ভাবি যদি এসময় নিখুঁত লক্ষ্যে কোনও উথলানো
বয়সের গরমাগরম সিসে এক চুমুতেই ফুঁড়ে দিত
এই ফোকলা মগজ...
অবশ্য এরই মধ্যে ঠিক বুঝে যাই
আমি নিজেকেই ডেকে এনে কোনওদিন
বলতে পারিনি,
"যাও বাথরুমে বরং হালকা হয়ে এসো"
এভাবে ডায়েরিকেও পেজমার্ক অফার করা স্বাস্থ্যবিধি নয়
কাজেই অকাজে কেউ মানে না পাওয়ার মতো মানে পেয়ে যায়
চেঁচামেচি অভ্যাস করতে করতে কেউ চুপচাপ হুড়কো
তোলে
(প্রবাদ বলেছে এই পৃথিবীর কবর আর কবরের পৃথিবীও
বাছার সময় সীমিত)
কিচ্ছুটি হওয়ার জো নেই
ঘেয়ো কবিতারা যেমন গরীব হতে চায়
ঘেয়ো গরীবেরা তেমনই কবিতা হতে চায়
হেঁটে দৌড়নোর দিকে এগোতে এগোতে
দৌড়ে হাঁটার দিকে লাফাতে লাফাতে
তোমরা মোহিত হয়ে ওঠো ঠিক আমার মতোই...
প্রতিটি লেখাই অবচেতনের নিটোল প্রবাহ।
ReplyDelete