শয়তানের চোখ
একটা
ত্রিকোণাকার সকাল থেকে উঠে এসে
নদীর ঘোলা জলে
অগণিত কাকের ডানা
ওড়ে
ওড়ে না
মেঘের গর্জন
ওড়ে
ঝরে পড়ে
জ্যোৎস্নায়
মৃত্যুর সন্ধান খোঁজা
মৃত্যু মৃত্যুর সন্ধান করে
জ্যোৎস্না জ্যোৎস্নাকে পায়
অনুশোচনা
অনুতপ্ত
অনুতপ্তের অনুশোচনা
ব্যাঙাচি
ব্যাঙ সাজে
ওড়ে
খুব ভোরে সেখানে জীবন ত্রিভুজ আঁকে
আড়াই
হাজার রাত ধরে যে যোনিপথ ভাঁজ হয় ভাঁজ খোলে বন্ধ হয়
আড়াই হাজার পথের কাঁটায়
চোখের সাঁজে আত্মহত্যা নামে
অন্ধকারে অন্ধকার
কে
তোমাকে রক্ষা করবে? কে তোমার হৃদয় হতে চোখের ক্ষত তুলে
আনবে ডুবরির মতো?
রক্তের
স্রোতে আলোর ফ্লাস্ক
চোখের ভাঁজে জোঁক বিশ্রাম পায়
রোদের ছোপে অন্ধকার গলে
রোদের ছায়ায় আরোপিত চাঁদ
রাতের
আকাশে স্যাটেলাইট; রাতের পৃথিবী সুন্দর খোঁজে; বৈদ্যুতিক হ্যারিকেন, গতির মানবতায় দপ দপ করে;
সমুদ্র
তোমার শিরায় শিরায়; নদী তোমার স্নায়ুতে—এই মাছটি উড়তে থাকে
মৌনতার
জঙ্গলে
যৌনতার মুখরতায়
গাছের আগায়
সাপ তার বিছা খোঁজে
ভিতরে তার ফড়িং দাপায়
ভিতরে তার প্রজাপতি খেলে
জলদানবের
আদর খোঁজা
অকাল বোধের ডুমুর
আলোর ঝংকার
গহীনের ব্যাথার—
এখানে কোনো আমরা নেই; পৃথিবীতে কোনো আমরা নেই;
কোন
শিশুটি ডুমুর ছুঁড়ে মেরেছে?
ভিতরে তার ফুলের বাসনা?
দানবের
পৃথিবী
রাক্ষসী তার হৃদয় খেলে গতি বাড়ে
রাক্ষসী তার হৃদয় নিয়ে খেলে
দানব
জানে আমরা ছিলাম
দানব ভাবে আমরা ছিলাম—আমাদের হৃদয় খেয়ে আমরা হয়েছি
দানব মানে আমরা হয়েছি
দানবের কোনো পৃথিবী নেই
দানব লুকোয় না এটা—আমরা আমাদের পৃথিবী
শরীরের
মানচিত্র
কে এঁকেছে
কে আঁকেনি
দানব শরীরে জনপদ গড়ে
রাক্ষসী
তার হৃদয় খায়
রাক্ষসী তার হৃদয়ে লুকায়
রাক্ষসী তার হৃদয় গড়ে
দানব তার অতিকায় দানব
দানব তার অতিকায় রাক্ষস
ঘুমের
মধ্যে ঘুমিয়ে গেলে আর জেগে ওঠে না
জাগরণে জেগে ওঠার অপেক্ষায়
ঘুমাতে নেই
চোখের ভিতরের চোখ
ফাল পারে
ছটফটায়
বৈদ্যুতিক কয়েল পোড়ে
কেরোসিন ল্যাম্প দাপায়
কাশবনে আগুন লেগেছে
দুপুরের
খাবার কাদের উদ্ভাবন?
বৃক্ষের মাংস
মাংসের ঝোল
বৃক্ষের হাড়ে গলায় মালা ঝুলিয়ে দেই
বৃক্ষের সঙ্গমে নিঃশ্বাস
মৃত্যু দাবা খেলে না
দানবের খেলা দাবা না
দানব ও দানবী
রাক্ষস ও রাক্ষসী
এক পাতে শোয়
প্রাণ ঝলসে খায়
মানুষ হয় না
রাতকে
কেউ আবিষ্কার করেনি
রাত আবিষ্কার করেছে
কাক তার চোখ লুকায়
মেঘ তার পালক শুঁকায়
ছনের চালে জ্যোৎস্না জ্বলে
নবদম্পতির মাটির ওম
শীতের রাতের মেঘের গর্জন
সাপ ডিমে তা দেয়
কে
তাকে রূখে দেবে? কে তাকে রক্ষা করবে? কে তার কোলাহলের রাতে রোদের আবির্ভাব রুখবে?
আদিসূর্যের
চোখ
কে দুপুর উদ্ভাবন করেছে? সূর্যগ্রহণের সত্তায়
কে তাতে এঁকে দিয়েছে উন্মত্ততার ঘুর্ণিঝড়? আমরা যখন আমি,
তুমিও যখন আমরা হতে, কে আমাদের রুখে
দিয়েছে এক ও অনন্যে?
আদিসূর্যের চোখে রক্ত
সাপ তবু দুধে তৃষ্ণা মেটায়
রাতের নিঃশ্বাস ঝনঝনিয়ে ওঠে
তাকাও
তাকাবে না
ঝাঁকি জালে বুকের ক্রোধ
মেলে ধরে
গুঁটিয়ে নেয়
নদীর মোহনা ডাকে
দূরে দিগন্ত
শয়তানের কোষে অপূর্ব শয়তান
বিস্তার
খোঁজে
বিস্তৃতি পায়
সময়ের সত্যে
সত্যের সময়ে
এক পা বাড়িয়ে খাঁদ
দুই পা বাড়িয়ে মহাবিশ্ব
মিথ্যা তার অন্তরঙ্গ মিথ্যা
যেখানে
নদী হেলে পড়েছে
অপার খাঁদ
রোদের ব্লেড
জল কাটলে রক্ত বেরোয়
গহীনে অন্ধকার
ফাঁকা চোখে এতোটা আগুন
আদিসূর্যের হতাশা
কেবল আগুন থেকে শুরু নয়
শূন্যতা তার অনন্ত শূন্যতা
হলুদ
তার প্রাণের বাসনা
স্বপ্ন যদি কেবল পুংলিঙ্গ হয়
যদি এবং কেবল যদি
সবুজ ভিতরে লুকানো
রক্তিম অতীত
ধূসর তার ভাগ্যের ধূসর
ভবিষ্যৎ গণনায়
নিশ্চিত বিস্তার
পায়ে
পায়ে পায়
খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে
পড়ন্ত দেহ
উড়ন্ত চোখ
তারা খসে
পেটের ভিতরের প্রজাপতি দিগন্তে গোঁত্তা খায়
তুমি বিপন্ন আমরা
জন্মের অনন্ত বিপন্নতায়
অনন্ত অন্ধকারের দিকে
রাত খুব নিখুঁত রাত
No comments:
Post a Comment